ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার ৩নং সিংড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন ও দিনাজপুর জেলা স্কুলের ইংরেজি বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক তাহারিমা আকতার দম্পতির যমজ কন্যা এবার একসঙ্গে মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়ে এলাকাজুড়ে আনন্দের আবহ সৃষ্টি করেছেন।

একসঙ্গে জন্ম, একসঙ্গে বেড়ে ওঠা, একই প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা- শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ধাপে যেন অভিন্ন পথচলা যমজ দুই বোন মুতমাইন্না সারাহ ও মুমতাহিনা সামিহার। ধারাবাহিক সেই যাত্রার শেষ প্রান্তে এসে তাঁরা দুজনই চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়নের সুযোগ পেয়েছেন। মুতমাইন্না সারাহ ঢাকা মুগদা মেডিকেল কলেজে এবং মুমতাহিনা সামিহা সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন।


চেহারা-গড়ন ও আচরণে যেমন মিল, তেমনি পড়াশোনাতেও ছিল সমান তালে এগিয়ে চলা। প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছেন তাঁরা। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় দুজনই সব বিষয়ে জিপিএ-৫ অর্জন করেন। শিক্ষা জীবনে তাঁরা দিনাজপুর গভর্নমেন্ট গার্লস হাই স্কুল ও দিনাজপুর সরকারি কলেজে অধ্যয়ন করেছেন।
সাফল্যের পেছনের গল্প জানাতে গিয়ে যমজ দুই বোন বলেন, পড়াশোনায় তাঁরা কখনো অতিরিক্ত চাপ বা রাত জেগে পড়ার রেকর্ড গড়েননি। তবে যতটুকু পড়েছেন, তা নিয়ম মেনে ও মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন। কোনো দিন ক্লাসে অনুপস্থিত থাকেননি। শিক্ষকদের কথা মনোযোগসহকারে শুনে নোট করে বাড়িতে ফিরে আবার পড়েছেন। নিয়মানুবর্তিতা ও আত্মবিশ্বাসই তাঁদের এই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি বলে জানান তাঁরা।
মেয়েদের সাফল্যে আবেগাপ্লুত মা তাহারিমা আকতার বলেন, “আমাদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় ছেলে তাহমীদ বিন সাজ্জাদ বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের ছাত্র। যমজ দুই মেয়েও মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় আমার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। আমার স্বপ্ন ছিল ওরা চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবায় নিয়োজিত হবে। মা হিসেবে আমি ভীষণ গর্বিত।”
বাবা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ওরা খুব মনোযোগী ছিল। একজনের থেকে অন্যজন এক-দুই নম্বর কম পেলেই পরের পরীক্ষায় তাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করত। এই প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবই ওদের এগিয়ে নিয়েছে। এইচএসসি পরীক্ষার পর দুজন একসঙ্গে মেডিকেল প্রস্তুতি নিয়েছে, একে অপরকে সহযোগিতা করেছে। আজ সেই পরিশ্রমের ফল এসেছে।”
সারাহ ও সামিহা তাঁদের এই সাফল্যের পেছনে বাবা-মা, শিক্ষক, আত্মীয়স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীদের অবদান অকপটে স্বীকার করেন। ভবিষ্যৎ লক্ষ্য সম্পর্কে তাঁরা জানান, প্রথমত একজন ভালো ও মানবিক মানুষ হতে চান। পাশাপাশি দক্ষ চিকিৎসক হিসেবে মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করাই তাঁদের জীবনের প্রধান লক্ষ্য।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available