আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলকে ছাড়লেই কেবল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা করবে ইরান। এমন মন্তব্যই করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।

তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি মধ্যপ্রাচ্যে হস্তক্ষেপ বন্ধ না করে এবং ইসরায়েলকে দেওয়া সমর্থন ত্যাগ না করে, তবে তেহরান তাদের সঙ্গে কোনো সহযোগিতা করবে না।


৩ নভেম্বর সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
সোমবার তেহরানে এক ছাত্রসমাবেশে খামেনি বলেন, “যদি তারা পুরোপুরি ইসরায়েলি শাসনকে সমর্থন করা বন্ধ করে, এখানকার সামরিক ঘাঁটি গুটিয়ে নেয় এবং এ অঞ্চলে হস্তক্ষেপ না করে, তাহলে সহযোগিতা নিয়ে ভাবা যেতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের ঔদ্ধত্যপূর্ণ স্বভাব আত্মসমর্পণ ছাড়া অন্য কিছুই মেনে নেয় না।”
১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর যুক্তরাষ্ট্রের তেহরান দূতাবাস দখলের বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ওই বিপ্লবে পশ্চিমা সমর্থিত তৎকালীন শাসক শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভিকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল।
চলতি বছরের জুনে ইরানের ওপর নজিরবিহীন বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। অঅর এই হামলার জেরে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ওই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রও সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য অংশ নেয় এবং ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এতে ইরানে ৯৩৫ জন এবং ইসরায়েলে ২৪ জন নিহত হন।
এই যুদ্ধের পর ইরান পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। আর এর ফলে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে চলমান পারমাণবিক আলোচনাও ভেস্তে যায়। পরে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় ২৪ জুন থেকে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
খামেনি বলেন, “যদি একটি দেশ শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং শত্রুরা বুঝতে পারে যে এই শক্তিশালী জাতির মুখোমুখি হয়ে তাদের লাভ নয়, বরং ক্ষতিই হবে, তাহলে সেই দেশ নিরাপদ থাকবে।”
২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে গিয়ে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর থেকে দেশটি কঠোর অর্থনৈতিক চাপের মুখে রয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির উদ্যোগে ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইরানের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে জাতিসংঘ।
গত রোববার আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, তেহরান এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী, তবে তা শুধুমাত্র পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে। ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা নিয়ে কোনো আলোচনায় তারা রাজি নয়।
তিনি আরও বলেন, “যখন যুক্তরাষ্ট্র সমমর্যাদা ও পারস্পরিক স্বার্থের ভিত্তিতে আলোচনায় প্রস্তুত হবে, তখনই আমরা আলোচনায় ফিরব। তাদের যেমন তাড়া নেই, আমাদেরও তাড়াহুড়ো নেই।”
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available