আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেনিজুয়েলা থেকে আসা একটি মাদকবাহী নৌযানে হামলা চালিয়েছে। এতে তিনজন নিহত হয়েছেন। ১৫ সেপ্টেম্বর সোমবার ট্রাম্প বলেন, “সহিংস মাদক কার্টেল ও নারকো-সন্ত্রাসীদের” লক্ষ্য করে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তবে নৌযানটিতে মাদক ছিল—এমন প্রমাণ তিনি প্রকাশ করেননি। মঙ্গলবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, “আজ সকালে আমার নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা দ্বিতীয় দফা হামলা চালিয়েছে। এগুলো ছিল ভয়ঙ্কর সহিংস মাদক কার্টেল ও নারকো-সন্ত্রাসীদের নৌযান।” তিনি দাবি করেন, হামলার পর সমুদ্র জুড়ে ছড়িয়ে থাকা কোকেন ও ফেন্টানিলের বড় বড় চালান ধরা পড়ে।
ট্রাম্পের মতে, সামুদ্রিক পথে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক প্রবেশ কিছুটা কমলেও স্থলপথ দিয়ে এখনো আসছে। “আমরা কার্টেলগুলোকে জানিয়ে দিচ্ছি—স্থলপথেও তাদের থামানো হবে।”
মার্কো রুবিওও প্রথম হামলার পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেন, ওয়াশিংটনের কাছে “শতভাগ নিশ্চিত প্রমাণ” ছিল যে নৌযানটি মাদক পাচারে জড়িত।
অন্যদিকে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের “বোমা হামলার হুমকি” দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক পুরোপুরি ধ্বংস করেছে। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ভেনিজুয়েলা তাদের বৈধ আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করবে। যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তার দেশ আত্মরক্ষায় প্রস্তুত।
সম্প্রতি ক্যারিবীয় সাগরে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে। গত সপ্তাহে পরিচালিত প্রথম নৌযানে হামলায় ১১ জন নিহত হন। এ হামলার পর ভেনিজুয়েলা দুইটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান উড়িয়ে মার্কিন যুদ্ধজাহাজকে ঘিরে ধরে। জবাবে ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, ভেনিজুয়েলার যুদ্ধবিমান যদি মার্কিন সেনাদের ঝুঁকিতে ফেলে তবে সেগুলো গুলি করে ভূপাতিত করা হবে।
এর মধ্যেই নতুন উত্তেজনা তৈরি হয়, যখন ভেনিজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ভান গিল অভিযোগ করেন, মার্কিন নৌবাহিনী তাদের একটি ছোট মাছ ধরার নৌযান আট ঘণ্টা ধরে অবৈধভাবে দখলে রেখেছিল। তিনি দাবি করেন, এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছাকৃতভাবে সংঘাত উসকে দিচ্ছে, যার লক্ষ্য কারাকাসে ‘শাসন পরিবর্তন’।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা বহু দেশ মাদুরোর ২০২৪ সালের জুলাই নির্বাচনে বিজয়কে স্বীকৃতি দেয়নি। তাদের দাবি, স্বাধীন পর্যবেক্ষকের সহায়তায় সংগৃহীত প্রমাণ অনুযায়ী বিরোধী প্রার্থী এডমুন্ডো গনসালেস বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন।
এছাড়া, মার্কিন কর্মকর্তারা মাদুরোর বিরুদ্ধে ‘কার্টেল অব দ্য সানস’ নামের একটি মাদকচক্র পরিচালনার অভিযোগ এনে তার গ্রেপ্তারে ৫ কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। তবে মাদুরো এসব অভিযোগ অস্বীকার করে একে “আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্র” বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি ভেনিজুয়েলার জনগণকে বেসামরিক মিলিশিয়ায় যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যা আগে রাজনৈতিক সমাবেশ ও কুচকাওয়াজে জনসমাগম বাড়ানোর জন্য ব্যবহার হতো।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available