সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: তিন বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের আলীপুরে খাসিয়ামারা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ। ফলে প্রতিদিনই রশি টেনে খেয়া নৌকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে পারাপার হতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষার্থী, নারী-শিশুসহ সাধারণ যাত্রীরা। এলাকার মানুষের ভোগান্তি দিন দিন বাড়লেও সেতুর কাজের অগ্রগতি নেই বললেই চলে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ৫০০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কোটি ২৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আলীপুর-টেংরাটিলা খেয়াঘাটে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে আনুষ্ঠানিকভাবে এর নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। কিন্তু শুরু থেকেই কাজের গতি ছিল ঢিমেতালে।


স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঠিকাদার দুই দিন কাজ করলে দুই মাস কাজ বন্ধ রাখেন। বর্তমানে প্রায় ছয়মাস ধরে সব ধরনের কাজই বন্ধ রয়েছে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বাড়ছে।
আলীপুর গ্রামের বাসিন্দা জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন জীবনবাজি রেখে খেয়া দিয়ে পারাপার হচ্ছি। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে ভয় লাগে। সেতুর কাজ কখন শেষ হবে, সে বিষয়ে কেউ কোনো জবাব দিতে পারে না।’
একই গ্রামের গৃহিণী ফারজানা আক্তার সেতু বলেন, ‘খুব কষ্ট করে খেয়া পার হতে হয়। বৃষ্টি হলে বা নদীতে স্রোত থাকলে আরও ভয় লাগে। কতদিন এভাবে চলবে আমরা জানি না।’
টেংরা হাইস্কুলের শিক্ষার্থী তুষার বলেন, ‘ব্রিজের কাজ শেষ না হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। বর্ষাকালে যখন স্রোত বেশি থাকে তখন এদিক দিয়ে যেতে খুব ভয় লাগে। সবসময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা কাজ করে।’
এ বিষয়ে দোয়ারাবাজার এলজিইডির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ঠিকাদারের খামখেয়ালীপনায় ব্রিজের কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। কাজ বন্ধ না রাখলে আরো অনেক আগেই ব্রিজের কাজ শেষ হয়ে যেতো।’
এ বিষয়ে ঠিকাদার শংকর বাবুর মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
সুনামগঞ্জের এলজিইডি'র নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, ‘ঠিকাদারের সাথে আলাপ হয়েছে। খুব শিঘ্রই ব্রিজের কাজ পুনরায় শুরু হবে।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available