গাজীপুরের (শ্রীপুর) প্রতিনিধি : গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা এলাকায় অবস্থিত কর্নপুর গুচ্ছগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বর্তমানে চরম শিক্ষার্থী সংকটে ভুগছে। কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক শিক্ষার্থী না থাকা, শিশুদের জন্য খেলার মাঠের অভাব এবং দীর্ঘদিনের অবহেলার কারণে বিদ্যালয়টির স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর বিপরীতে এখানে ৫ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। তবে শিক্ষার্থী সংকটের কারণে বিদ্যালয়কালীন সময়ের একটি বড় অংশ শিক্ষকরা অলসভাবে কাটাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।


সরেজমিনে ৩০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কোনো শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নেই। একটি কক্ষে দরজা বন্ধ করে পাঁচজন শিক্ষক বসে আছেন। ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টির একটি দ্বিতল ভবন থাকলেও শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য কোনো মাঠ নেই। বিদ্যালয়ের সামনে একটি সরকারি পুকুর ভরাট করে মাঠ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা এখনো খেলাধুলার উপযোগী হয়নি।
জমির সংকটের কারণে বিদ্যালয়ে ওয়াশব্লক নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে বিদ্যালয়ের সামনে টিনের ছাপড়া দিয়ে খোলা টয়লেট নির্মাণ করে ব্যবহার করা হচ্ছে।
জানা গেছে, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় কোনো নির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুসরণ করা হয়নি। এ অবস্থার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থাকেই দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রথমদিকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তথ্য দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করলেও পরে জানানো হয়—পঞ্চম শ্রেণীতে ৭ জন, চতুর্থ শ্রেণীতে ১১ জন, তৃতীয় শ্রেণীতে ১৬ জন, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ১৪ জন এবং প্রথম শ্রেণীতে ১৯ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে। তবে সর্বশেষ বার্ষিক পরীক্ষায় কতজন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে—সে বিষয়ে কোনো লিখিত প্রমাণ দেখাতে পারেননি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা বেগম বলেন, “খেলার মাঠ না থাকায় দিন দিন শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে। আশপাশে আরও কয়েকটি বিদ্যালয় থাকায় অনেক শিক্ষার্থী সেখানে চলে যাচ্ছে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গুচ্ছগ্রাম ও আশপাশের এলাকার শিশুদের জন্য বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলেও পরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধার সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক অভিভাবক সন্তানদের অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করাচ্ছেন। তবে লেখাপড়ার মানোন্নয়ন, শিক্ষকদের আন্তরিকতা, আলাদা খেলার মাঠ বরাদ্দ, ভবন সংস্কার ও প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করা হলে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে করেন তারা।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা নাসরিন বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে গাজীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ ভুইয়া জানান, বিদ্যালয়টির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2026, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available