কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: টানা চারদিন ধরে বয়ে চলা পশ্চিমা বাতাসের প্রভাবে হাড়কাপানো শীত ও ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জয়পুরহাট জেলার জনজীবন।

২১ ডিসেম্বর রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা না মেলায় শীতের প্রকোপ আরও বেড়ে যায়। ঘন কুয়াশার কারণে মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে।


চরম শীত ও কুয়াশায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্রমজীবী ও নিম্নআয়ের মানুষ। দিনমজুর, কৃষকসহ খেটে খাওয়া মানুষজন জীবিকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করেই কাজে বের হচ্ছেন। তবে রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল খুবই কম।
বিশেষ করে বস্তিবাসী ও ছিন্নমূল মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে তাদের রাত কাটছে কষ্টে। একই সঙ্গে কৃষকরাও মাঠে কাজ করতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। ঘন কুয়াশা ও ঠাণ্ডার কারণে স্বাভাবিক কৃষিকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
পৌর এলাকার বাসস্ট্যান্ড কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী মাসুদ মিয়া বলেন, ‘আজ শীতের সঙ্গে ঘন কুয়াশা থাকায় বাড়ি থেকে বের হওয়াই কষ্টকর। বৃষ্টিতে যেমন শরীর ভিজে যায়, তেমনি কুয়াশায় ভিজে যাচ্ছি। রাস্তায় লোকজন নেই বললেই চলে। তারপরও জীবিকার তাগিদে বের হতে হচ্ছে।’
জয়পুরহাট–বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়কে বাসচালক সোহেল রানা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই টানা ঘন কুয়াশা বিরাজ করছে। দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে বাস চালাতে হচ্ছে। যাত্রী সংখ্যা খুবই কম। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এই অবস্থা আরও কয়েকদিন চলতে থাকলে নিরাপত্তার কারণে বাস চলাচল বন্ধ রাখতে হতে পারে।
নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হামিদুল ইসলাম জানান, ‘রোববার ভোর ৬টায় জয়পুরহাটসহ পার্শ্ববর্তী নওগাঁর বদলগাছীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৯টা পর্যন্ত তাপমাত্রা অপরিবর্তিত ছিল। শনিবারের তুলনায় রোববার তাপমাত্রা আরও কমেছে এবং কুয়াশার ঘনত্ব বেড়েছে। তিনি বলেন, কুয়াশা এমনভাবে পড়ছে যেন হালকা বৃষ্টির মতো মনে হচ্ছে।
এদিকে শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগের প্রকোপ। জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিনে শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। সর্দি, জ্বর, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রাশেদ মোবারক জুয়েল বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে শিশু ও বয়স্করা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। শীতজনিত বিভিন্ন রোগে তারা আক্রান্ত হচ্ছেন।’ তিনি এ সময় শিশু ও বয়স্কদের অপ্রয়োজনে বাইরে না যাওয়ার এবং গরম কাপড় ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available