বিজয় দিবসে ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’ সড়কের ফলক উন্মোচন
নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন গুলশান-২ থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত সড়কটির নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’।১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে সড়কটির নামফলক আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করা হয়।ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের সভাপতিত্বে আয়োজিত নামফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘ফেলানীর নামে এই সড়ক বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির একটি নতুন বার্তা বহন করে। বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে নিজের সম্মান বজায় রেখে আন্তর্জাতিক পরিসরে কথা বলতে পারে এই সড়ক তার প্রতীক। প্রতিবেশীসহ যেকোনো দেশের সঙ্গে সম্মান বজায় রেখেই সম্পর্ক গড়ে তোলার অঙ্গীকার স্মরণ করিয়ে দেবে ফেলানী অ্যাভিনিউ।স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, ফেলানী হত্যাকাণ্ড কোনো সাধারণ হত্যার ঘটনা নয়; এটি একটি সুস্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। এই সড়ক মানবাধিকার লঙ্ঘনের সেই নির্মম ঘটনার কথা মানুষকে বারবার স্মরণ করিয়ে দেবে।অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘দেশের ১৮ কোটি মানুষ সীমান্ত হত্যা বন্ধ দেখতে চায়। ফেলানী খাতুনের প্রতি যে নৃশংসতা চালানো হয়েছিল, তা প্রতিদিন স্মরণ করিয়ে দিতেই এই সড়কের নামকরণ করা হয়েছে।’তিনি আরও বলেন, ‘এই সড়কের মাধ্যমে বিশ্ব বিবেকের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে যে বাংলাদেশের সীমান্তে এখনো সীমান্ত হত্যার মতো জঘন্য ঘটনা ঘটে। বর্তমান সরকার সব ধরনের সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে চায়।’এর আগে রাজধানীর গুলশান-২ থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির নাম ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ভারতীয় দূতাবাসের পাশ দিয়ে যাওয়া সড়কটি সীমান্তে নিহত কিশোরী ফেলানী খাতুনের স্মৃতিকে ধারণ করে এই নামে নামকরণ করা হয়।উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে হৃদয়বিদারকভাবে নিহত হন ফেলানী খাতুন। ভারত থেকে বাবার সঙ্গে দেশে ফেরার পথে ১৫ বছর বয়সী এই কিশোরী বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারান। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর দীর্ঘ সময় কাঁটাতারে ঝুলে থাকা তার নিথর দেহ দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং সীমান্ত নিরাপত্তা ও মানবাধিকার ইস্যুতে তীব্র আলোচনা জন্ম দেয়।