শরতের স্নিগ্ধ কাশফুলে সুরভিত নোবিপ্রবি ক্যাম্পাস
                                                             নোবিপ্রবি প্রতিনিধি : দক্ষিণ উপকূলকে অবস্থিত প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) এক প্রকৃতির লীলাভূমি। বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। প্রতিটি ঋতুই আসে নিজস্ব রূপ, রস ও গন্ধ নিয়ে। নোবিপ্রবিতেও ছয়টি ঋতুতেই দেখা যায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, তবে শরৎকাল তার সব ঋতুর মধ্যে সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর ও প্রাণবন্ত।বর্ষার শেষে নীল আকাশে সাদা-মেঘের ভেলা এবং কাশফুলের শুভ্রতা নিয়ে আসে শরৎ। এই ঋতুর বিশেষ আকর্ষণ হলো সাদা কাশফুলের সমারোহ, যা কবি-সাহিত্যিকদের অনুপ্রেরণার উৎস। একজন কবি যেমন লিখেছেন“শরৎ সেজেছে কাশফুলেরথরে-বিথরে বালুচরে।সাদা মেঘের শতদল উড়ছেঅপরূপা নীলাম্বরে।নোবিপ্রবি ক্যাম্পাস জুড়ে কাশফুলের শুভ্রতা ছড়িয়ে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং নোয়াখালীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত দর্শনার্থীরা প্রতিদিন এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসে। ক্যাম্পাসের মূল প্রাঙ্গণ, অভ্যন্তরীণ রাস্তার দুপাশ, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, কেন্দ্রীয় মসজিদের চারপাশ এবং আবাসিক হলের আশেপাশ প্রতিটি জায়গা এখন কাশফুলে ভরে গেছে।বিকালে দূর-দূরান্তের দর্শনার্থীরা আসে বন্ধু-বান্ধবী, প্রিয়জন বা পরিবারসহ। প্রেমিক যুগল ও নবদম্পতিরা হাত ধরে হেঁটে চলে, ছবি তোলে, বন্ধুদের দল খোলা আকাশের নিচে গানের আড্ডা দিচ্ছে, আবার মাঠের ঘাসের উপর বা চত্বরগুলোতে গ্রুপ স্টাডি করছে শিক্ষার্থীরা। কাশফুলের শুভ্র সৌন্দর্য যে কারো মন মুহূর্তেই মুগ্ধ করতে পারে, তা সহজেই বোঝা যায়।ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অর্পিতা পোদ্দার অর্পণ বলেন, নোবিপ্রবি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রকৃতির সৌন্দর্যের দিক থেকে এক অনন্য লীলাভূমি। বিভিন্ন ঋতুতে ক্যাম্পাস নবসাজে সেজে ওঠে, তবে শরৎকাল যেনো বিশেষভাবে আপন করে নেয়। শরৎকাল বিশ্ববিদ্যালয়কে দেয় এক নতুন রঙ, নতুন রূপ এবং এক ভিন্নরকম সজীবতা।শরতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে পুরো ক্যাম্পাস যেন এক কাশফুলের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। চোখ যতদূর যায়, ততদূর শুধু ধবধবে সাদা কাশফুল, যা দেখলে মনে হয় প্রকৃতির সৌন্দর্য যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে। প্রতিটি গাছ, পথচলা রাস্তা, চত্বর এবং মাঠে কাশফুলের এই অপরূপ সৌন্দর্য যেন মুহূর্তেই মনকে আনন্দে ভরিয়ে দেয়।কিছু শিক্ষার্থী বসে গল্প করছে, কেউ কেউ ছবি তুলছে, আবার কেউ আবার নিজের অন্তর্দৃষ্টি ধরে ছবি আঁকার অনুপ্রেরণা নিচ্ছে। এভাবেই নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে শরতের কাশফুল এক নতুন জীবন ও উচ্ছ্বাসের বার্তা নিয়ে আসে, যা শুধু চোখ নয়, মনকেও ছুঁয়ে যায়।শরতের এই সৌন্দর্য শিক্ষার্থীদের ব্যস্ত জীবন থেকে সাময়িক অবসর এনে দেয়, আর ক্যাম্পাসকে করে তোলে একটি জীবন্ত স্বপ্নের প্রাঙ্গণ। মনে হয়, কাশফুলের এই স্বর্গরাজ্য যেন নোবিপ্রবির প্রতিটি কোণায় বসতি গেড়েছে।