নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকদল ঢাকায় পৌঁছেছে।

৩ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা ঢাকায় পৌঁছান।


এর আগে মঙ্গলবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের বরাত দিয়ে বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, ৩ ডিসেম্বর বুধবার সকালে যুক্তরাজ্য থেকে একটি এবং সন্ধ্যায় চীন থেকে আরেকটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদল ঢাকায় এসে পৌঁছাবে। চেয়ারপারসনের পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে দেশবাসীর মাধ্যমে মহান আল্লাহর দরবারে তার দ্রুত আরোগ্যের জন্য দোয়া চাওয়া হয়েছে।
জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ দল ঢাকায় আসবেন। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, কাতার, সৌদি আরব, পাকিস্তান ও ভারত ইতোমধ্যে চিকিৎসা সহায়তার হাত বাড়িয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘খালেদার জন্য দেশের বাইরে নেয়ার জন্য যে কথাটি আমি পূর্বেও বলেছি, মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা উনাকে দেখেছেন। আজকেও ইউকে থেকে উনাকে দেখার জন্য বিশেষজ্ঞ আসবেন এবং উনারা দেখবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘দেখার পরবর্তীতে উনাকে যদি ট্রান্সফারেবল হয়, আমাদের যদি ট্রান্সফার করার প্রয়োজন পড়ে— মেডিকেল বোর্ড মনে করে, তখনই সেই যথাযথ সময়ে উনাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসনকে এ মুহূর্তে দেশের বাইরে নেয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, ‘আমাদের সকল প্রস্তুতি আছে; কিন্তু সর্বোচ্চটা মনে রাখতে হবে যে— রোগীর বর্তমান অবস্থা এবং সর্বোপরি মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শের বাইরে কোনো কিছু করার সুযোগ এই মুহূর্তে আমাদের নেই।’
অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ মেহেরবাণীতে ডাক্তাররা যে চিকিৎসা দিচ্ছেন, সেই চিকিৎসা উনি (বেগম খালেদা জিয়া) সেটি উনি গ্রহণ করতে পারছেন অথবা আমরা যদি বলি উনি মেনটেইন করছেন।’
উল্লেখ্য, ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দ্রুত তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সেদিন তার অনেক শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছিল। দ্রুত তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাৎক্ষণিকভাবে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার চিকিৎসা শুরু হয়। অবস্থার অবনতি হলে দুই দিন আগে তাকে হাসপাতালের কেবিন থেকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে মেডিকেল বোর্ডের দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। দুই বছরের বেশি সময় তিনি কারাবন্দী ছিলেন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তৎকালীন সরকার নির্বাহী আদেশে তার সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। এরপর ছয় মাস পরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছিল সরকার। যদিও চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ যেতে দেওয়া হয়নি।
৮ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মুক্তি পান খালেদা জিয়া। এরপর গত ৮ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যান তিনি। চার মাস পর ৬ মে দেশে ফেরেন খালেদা জিয়া।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available