হাকিমপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: আজ ঐতিহাসিক ১১ ডিসেম্বর, দিনাজপুরের হিলি শত্রুমুক্ত দিবস। দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এবং মুক্তিকামী মানুষের অসীম সাহসিকতার মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে (১১ ডিসেম্বর) দিনাজপুরের হিলি অঞ্চল হানাদারমুক্ত হয়। এই দিনটি ৭ নম্বর সেক্টরের আওতাধীন হিলিবাসীর জন্য বিজয়ের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হিলির মুহাড়াপাড়া এলাকায় সংঘটিত হয়েছিল এক বড় ধরনের সম্মুখযুদ্ধ। এই অঞ্চলের স্বাধীনতাকামী মানুষ সেদিন সম্মিলিতভাবে অসীম সাহসিকতায় হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। অন্যদিকে, হানাদার বাহিনীও মেতে উঠেছিল নির্মম হত্যাকাণ্ডে।


মুক্তিযোদ্ধা সামসুল আলম সেই ভয়াবহ দিনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘হিলির মুহাড়াপাড়া গ্রামে মিত্র ও মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের প্রচণ্ড সম্মুখ যুদ্ধ হয়েছিল। সেই যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন ৭নং সেক্টরের আনোয়ারসহ ৩৪৫ জন মুক্তিসেনা। আহত হয়েছিলেন প্রায় ১৪শ’ জন।’
অসংখ্য মুক্তিসেনার আত্মত্যাগ ও রক্তে ভেজা এই যুদ্ধের পর প্রবল প্রতিরোধের মুখে অবশেষে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল হানাদার বাহিনী। সেইসঙ্গে গা ঢাকা দিয়েছিল স্থানীয় রাজাকার, আলবদর, আল-শামস বাহিনীর সদস্যরা।
দীর্ঘদিনের বন্দিদশা ও ভয়াবহতা পেরিয়ে ১১ ডিসেম্বর হিলি শত্রুমুক্ত হওয়ার পর এলাকাবাসী বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতে ওঠে। আজকের এই দিনে আনন্দ উল্লাসে মুক্তিকামী মানুষ লাল সবুজের পতাকা উড়িয়ে বিজয়ের আনন্দ উদযাপন করেছিল।
প্রতি বছর এই দিনটি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করে হিলিবাসী। মিত্র ও মুক্তিবাহিনীসহ সব শহীদদের স্মরণে এখানে নির্মাণ করা হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ ‘সম্মুখ সমর’।
আজ ১১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করছে হিলি মুক্ত দিবস।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available