আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে কড়া ভাষায় সতর্ক করে বলেছেন, ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়াটাই এখন মাদুরোর জন্য সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে। ভেনেজুয়েলার ওপর ওয়াশিংটনের চাপ আরও বাড়িয়ে ট্রাম্প স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, মাদুরো যদি পরিস্থিতি নিয়ে ‘শক্ত চাল’ চালতে চান, তবে সেটাই হবে তাঁর শেষ ভুল। খবর আল জাজিরার।

২২ ডিসেম্বর সোমবার ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো রিসোর্টে নিজের শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ট্রাম্প। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই মাদুরো সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। অন্যদিকে আমেরিকার এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে চীন।


ভেনেজুয়েলার গুরুত্বপূর্ণ তেল খাতের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিতে ইতোমধ্যে অভিযান শুরু করেছে মার্কিন কোস্টগার্ড। তারা দেশটির তিনটি তেল ট্যাঙ্কার ধাওয়া করে জব্দ করেছে, যেগুলোতে প্রায় ৪০ লাখ ব্যারেল তেল রয়েছে।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, এই তেল ও জাহাজগুলো আর ফেরত দেওয়া হবে না। আমেরিকা এই তেল নিজেদের কৌশলগত মজুদে ব্যবহার করতে পারে অথবা বিক্রি করে দিতে পারে। ট্রাম্পের দাবি, ভেনেজুয়েলা এই জাহাজগুলো ব্যবহার করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর চেষ্টা করছিল।
ট্রাম্পের এই কর্মকাণ্ডকে ‘আন্তর্জাতিক জলদস্যুতা’ বলে আখ্যা দিয়েছে ভেনেজুয়েলা সরকার। প্রেসিডেন্ট মাদুরো পাল্টা এক ভাষণে ট্রাম্পকে ভেনেজুয়েলা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে নিজের দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যার দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল এক চিঠিতে জাতিসংঘকে বলেছেন, আমেরিকার এই অবরোধ কেবল তাঁদের দেশেই নয়, বরং বিশ্বজুড়ে তেল ও জ্বালানি সরবরাহে বড় ধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে।
এদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপে আমেরিকার এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। রাশিয়া মনে করে, ক্যারিবিয়ান সাগরে আমেরিকার এই সামরিক তৎপরতা আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলের জন্য বড় হুমকি ও তারা মাদুরো সরকারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। একইভাবে চীনও আমেরিকার এই পদক্ষেপকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, ভেনেজুয়েলার স্বাধীনভাবে উন্নয়ন ও অন্য দেশের সঙ্গে ব্যবসা করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে।
তবে রাশিয়া ও চীনের এই হুঙ্কারকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি মনে করেন, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়া এতটাই ব্যস্ত যে ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে তাদের শক্ত কোনো ভূমিকা নেওয়ার সুযোগ নেই।
এই ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে ২৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনার কথা রয়েছে। আমেরিকা ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছে, তারা তাদের মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে এই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি আরও বাড়াবে, যা লাতিন আমেরিকার রাজনীতিতে নতুন করে সংঘাতের শঙ্কা তৈরি করছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available