আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার পর ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউরোপের আরেক দেশ পর্তুগাল। রোববার একযোগে এই চার দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়। এ ঘটনা ইসরাইলিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
লন্ডন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়। পর্তুগালও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে জানিয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইলে হামাসের হামলার জেরে ফিলিস্তিনে ব্যাপক দমন-পীড়ন শুরু করে ইসরাইল। এ নিয়ে ইসরাইলের ওপর চাপ ক্রমেই বাড়ছে।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক বার্তায় বলেন, ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলিদের শান্তির আশায় এবং দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের জন্য যুক্তরাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।
শিল্পোন্নত (জি সেভেন) সাত দেশের মধ্যে যুক্তরাজ্য ও কানাডা প্রথম ফিলিস্তিনকে এই স্বীকৃতি দিল। আজ সোমবার নিউইয়র্কে শুরু হতে যাওয়া জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফ্রান্স ও অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এক্স-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, আজ থেকে কানাডা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিন ও ইসরাইল উভয় রাষ্ট্রের শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি পূরণে কাজ করারও প্রস্তাব দেন তিনি।
এদিকে, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির ঘোষণা দেন। এই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার পর এবার ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে পর্তুগালও। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাওলো রাঞ্জেল এক ঘোষণায় বলেন, পর্তুগিজ সরকার এখন থেকে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেষণের আগে এক সংবাদ সম্মেলনে পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়া পর্তুগিজ পররাষ্ট্র নীতির একটি মৌলিক, ধারাবাহিক এবং অপরিহার্য দিক।
এই স্বীকৃতি ফিলিস্তিনিদের দশকের পর দশক ধরে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। পশ্চিমা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে যুক্তি দিয়ে আসছে যে, এটি কেবল ইসরাইলের সাথে আলোচনার মাধ্যমে শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবেই হওয়া উচিত। কিন্তু এই পদক্ষেপের ফলে ওই দেশগুলো কার্যত যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের বিরুদ্ধেই গেল।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এবং জাতিসংঘে এর বিরোধিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
নেতানিয়াহু বলেছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবি আমাদের অস্তিত্বকে বিপন্ন করবে এবং সন্ত্রাসবাদ ছড়ানোর কাজ করবে।
জাতিসংঘের তিন-চতুর্থাংশ সদস্য ইতোমধ্যেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। সেখানে ১৯৩টির মধ্যে ১৪০টিরও বেশি দেশ এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
পর্তুগাল জানিয়েছে, তারা নিউইয়র্কে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। পর্তুগিজ প্রেসিডেন্ট বলেছেন, পর্তুগিজ সরকার যেভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে আমরা দুটি রাষ্ট্র থাকার সম্ভাবনাকে বাঁচিয়ে রাখছি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available