নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ বিমানের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) এ.বি.এম রওশন কবীর এবং পরিচালক (প্রশাসন) মো. নওসাদ হোসেন। দুজনই সরকারের উপ-সচিব। তারা মিলেমিশে বিমানের নিয়োগ ও টেন্ডার বাণিজ্য করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি বিমানের পাঁচটি ক্যান্টিনের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে। তাছাড়া নিয়োগ বাণিজ্য, ঘুস ও নিয়মবর্হিভূত সম্পদ অর্জনের এই দুই কর্মকর্তা সিদ্ধহস্ত।

সম্প্রতি, বিমানের পাঁচটি ক্যান্টিন পরিচালনা করতে ঠিকাদার নিয়োগের জন্য জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এই দুই কর্মকর্তা কালো তালিকভূক্ত প্রতিষ্ঠানকে ক্যান্টিন পরিচালনায় নিয়োগ দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন।


অনুসন্ধানে জানা গেছে, ক্যান্টিনের ঠিকাদার নিয়োগ কমিটির সভাপতি বিমানের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) এ.বি.এম রওশন কবীর। তার একক ক্ষমতার বলে মেসার্স ময়মনসিংহ এগ্রো লি: কে ক্যান্টিন ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন। প্রতিষ্ঠানটির মালিক রওশন কবিরের নিজ এলাকার হওয়ায় বাড়তি সুবিধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি নির্ধারিত সিডিউল মোতাবেক মেসার্স ময়মনসিংহ এগ্রো লি: এর কাগজপত্রের ত্রুটি এবং টেকনিক্যাল অফারে সমস্যা থাকার পরও তাকে ক্যান্টিন দেয়ার জন্য সব আয়োজন করছেন এই কর্মকর্তা।
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, মের্সাস এস. এ এন্টারপ্রাইজ এবং কাশবন ক্যান্টিনের মালিক একই ব্যাক্তি। তাদের পরিচালিত প্রতিষ্ঠান পিজি হাসপাতালে (বাংলাদেশে মেডিকেল কলেজ) ক্যান্টিন পরিচালনা করেছে। সেখানে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে কালো তালিকাভূক্ত হয়েছে। বর্তমানে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলমান। রমনা থানার মামলা নং ৩০(০৭)১৮।
এদিকে, পর্যবেক্ষক কমিটির সদস্য কামাল হোসেন (ডিজিএম-প্রশাসন) ও উপ ব্যবস্থাপক (বাজেট) তানভীর আহমেদ সরেজমিনে না গিয়ে ঢাকায় বসে ভৌতিকভাবে কাজ সেরে ফেলছেন। ক্যান্টিন পরিচালনার অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও ময়মনসিং এগ্রো লিমিটেড ও সারা বাংলা ক্যাটারিংকে কাজ দেয়ার জন্য এক ও দুই নাম্বারে টেকনিক্যালি প্রস্তুত করেছে।
এমন প্রতিষ্ঠান দিয়ে বিমানের ক্যান্টিন পরিচালনা করলে কর্মচারীরা মান সম্মত খাবার পাবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এসবকিছু পাশ কাটিয়ে দুই উপ সচিবের ক্ষমতাবলে এসব প্রতিষ্ঠানকেই কাজ দেওয়ার জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়ায় সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্যান্টিনে ঠিকাদার নিয়োগ করার কমিটির একাধিক সদস্য জাানান, এ.বি.এম রওশন কবীর সভায় কাউকে তোয়াক্কা করে না। বরং কমিটির অন্য সদস্যদের কেউ দ্বিমত প্রকাশ করলে তাদেরকে কটাক্ষ করেন। কমিটির অধিকাংশ সদস্য তার প্রতি নাখোশ থাকলে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলছেন না। একমাত্র পরিচালক (প্রশাসন) মো. নওসাদ হোসেন তাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। তারা দু’জনে মিলে বিমানের ক্যান্টিন ঠিকাদার নিয়োগ ও বিমানে বিভিন্ন পদে নিয়োগ বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, এ, বি,এম রওশন কবীর মেসার্স ময়মনসিংহ অ্যগ্রো লি: এর নিকট থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময় তাদেরকে ক্যান্টিন পরিচালনার টেন্ডার দিচ্ছেন। যার ফলে ক্যান্টিন ঠিকাদার নিয়োগ কমিটির কোন সদস্যরে মতামতকে মূল্যায়ন করেন না।
অপরদিকে, এই দুই উপ-সচিব বিমানের নিয়োগ কমিটির সদস্য হওয়ায় নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ছাপানো ও খাতা দেখার কাজের মূল দায়িত্বও তাদের। ফলে প্রাপ্ত নম্বর বাড়ানো বা কমানোর সুযোগ নিয়ে আর্থিক সুবিধা গ্রহন করে তাদের চাহিদা মত লোকদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন।
হঠাৎ করে এই দুই উপ সচিব কিভাবে অঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে গেছেন তা সরকারি সংস্থা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছেন বিমানের কর্মকর্তারা। তাদের নামে বেনামে ফ্লাট, গাড়ি বাড়ী রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বক্তব্য নিতে বাংলাদেশ বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) রওশন কবিরকে একাধিকবার কল দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available