মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: আনারস ও কলার পরেই পেঁপে তৃতীয় স্থান করে নিয়েছে মধুপুরের প্রধান অর্থকরি ফসল হিসেবে। আনারস গড় অঞ্চলের প্রধান অর্থকরি ফসল। দ্বিতীয় স্থানে আছে কলা। তারপরেই এখন পেঁপের অবস্থান। পেঁপে দীর্ঘদিন ধরে চাষাবাদ হলেও অন্যান্য ফসলকে টপকাতে পারেনি। উচ্চ ফলনশীল জাতের পেঁপের বীজ বাজারে আসার পরেই সূচক এগিয়ে যায়।
চাষিরা মনে করছেন কলাকে পিছনে ফেলে যেতে পারে পেঁপে চাষ। কারণ, পেঁপে নানাভাবে আবাদ করা যায়। সাথী থেকে শুরু একক ফসল হিসেবেও চাষে ফলন ও দামে কোনো প্রভাব পড়ে না। অল্প সময়ে কম খরচে কয়েকগুণ লাভ আসে। রোগ জীবাণু কম হওয়ায় ফলন হয় বেশি। কেজি দামে বিক্রির সুযোগ থাকায় ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনাও কম। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়লে সবজি হিসেবে বাজারে ভালো দাম আসে।
সরজমিনে মধুপুরের ২৫ মাইল বাজার থেকে দোখলা সড়ক দিয়ে এগিয়ে গেলে চোখে পড়ে আনারসের বাগানে সাথী ফসল হিসেবে থোকায় থোকায় গাছে ঝুলে থাকা পেঁপের দৃশ্য। গাছাবাড়ি বিট অফিসের সামনেই বড় বড় পেঁপের বাগান।
গাছাবাড়ি গ্রামের গিয়ে কথা হয় আব্দুল হক (৫০) নামের এক কৃষকের সাথে। তিনি এ বছর ৩২ বিঘা জমিতে আনারস চাষ করেছেন। সাথে মিশ্র ফসল হিসেবে টপলেডি জাতের পেঁপে চাষ করেছেন। পেঁপে পরিপক্ব হয়ে গেছে। বাগান থেকেই পেঁপেই বিক্রি করেছেন কোটির টাকার উপরে। সামনের বছর আনারস বিক্রি হবে।
সামনে এগিয়ে গেলেই দেখা যায় ২৫ মাইল-শোলাকুড়ি পাকা সড়কের পাশে বসে কয়েকজন শ্রমিক খবরের কাগজ দিয়ে পাকা পেঁপে মোড়াচ্ছেন। পাশেই বাগান। কেউ কেউ বাগান থেকে খাচি দিয়ে পাকা পেঁপে নিয়ে আসছেন। কেউ কেটে দিচ্ছে। হাগুড়াকুড়ি গ্রামের শাকিব (৩০) জানালেন, তারা পাইকার মোফাজ্জলের কেনা পেঁপের বাগানে নিয়মতি কাজ করেন।
নটাকুড়ি গ্রামের আব্দুল হাকিম (৩২) জানান, খবরের কাগজ দিয়ে মোড়ালে পেঁপেগুলো ভালো থাকে, নষ্ট হয় না। শোলাকুড়ি গ্রামের মফিজুল জানালেন, তাদের ব্যাপারী প্রায় চার কোটি টাকার পেঁপের বাগান কিনেছেন। এভাবে পেপারে মুড়িয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন। পেঁপে ৬০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দামে মোকামে বিক্রি হয়ে থাকে।
তবে শুধু এখানেই নয় এমন দৃশ্য এখন মধুপুর গড়ের বিভিন্ন গ্রামেই দেখা যায়। কৃষক পাইকার ব্যাপারী ফড়িয়া ট্রাক শ্রমিক লেবাররা ব্যস্ত সময় পার করছে বলেও জানালেন স্থানীয় কৃষকরা।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রকিব আল রানা বলেন, মধুপুরের মাটি ও আবহাওয়া সব ফসলের জন্যই বিশেষ উপযোগী। আনারস-কলার পাশাপাশি অর্থকরী ফসলের মধ্যে পেঁপে এগিয়ে যাচ্ছে। ঝুঁকি কম এবং লাভ বেশির কারণে সাথী ফসল হিসেবে পেঁপে চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।
উন্নত জাতের টপ লেডি, রেড লেডি, সুইট লেডি আবাদের ফলে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। এ বছর ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার পেঁপে বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনার কথাও জানান তিনি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available