লালমনিরহাট প্রতিনিধি: ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র সংগ্রাম, লাখো শহীদের রক্ত ও অসংখ্য মুক্তিকামী মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ৬ ডিসেম্বর হানাদারমুক্ত হয় লালমনিরহাট জেলা। এই দিনে বিজয়ের পতাকা হাতে উল্লাসে মেতে ওঠে লালমনিরহাটের স্বাধীনতাকামী জনতা।

লালমনিরহাটকে শত্রুমুক্ত করতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণপণ লড়াই চালান। স্থানীয় জনতা দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তাদের শক্ত আঘাতের মুখে পাক হানাদারবাহিনী, রাজাকার-আলবদর ও দোসররা পিছু হটতে বাধ্য হয়। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভোরে দুটি বিশেষ ট্রেনে করে তারা লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন থেকে রংপুর ক্যান্টনমেন্টের দিকে পালিয়ে যায়। পালানোর সময় তিস্তা নদী পার হয়ে তারা তিস্তা রেলসেতুর একটি গার্ডারে বোমা নিক্ষেপ করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।


মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে লালমনিরহাট ছিল ৬ নম্বর সেক্টরের আওতাভুক্ত। সেক্টরের সদরদপ্তর ছিল পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে। রেলওয়ের বিভাগীয় শহর হওয়ায় লালমনিরহাটে তৎকালীন সময়ে বিহারিদের আধিক্য ছিল। যুদ্ধের শুরুতে এই এলাকায় পাকবাহিনী গণহত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালায়। নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল তাদের নৃশংসতা।
চূড়ান্ত বিজয়ের আগ মুহূর্তে মুক্তিযোদ্ধারা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে চারদিক থেকে লালমনিরহাট শহর ঘিরে ফেলেন। শত্রুমুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়তেই শহরের দিকে মানুষজন ছুটে আসে। সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে বিজয়ের আনন্দ।
হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আলোচনা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এতে অংশ নেবেন মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সদস্য, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক ব্যক্তি, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available