জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন সানায়ে তাকাইচি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সানায়ে তাকাইচি হতে যাচ্ছেন জাপানের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। সদ্য অনুষ্ঠিত লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি দলীয় প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, অক্টোবরের শেষ দিকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।৬৪ বছর বয়সী তাকাইচি আদর্শ হিসেবে মার্গারেট থ্যাচারকে মানেন এবং নিজেকে সামাজিকভাবে রক্ষণশীল হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তার মন্ত্রিসভায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো হবে, যেন ‘নর্ডিক’দেশগুলোর মতো হয়ে ওঠে। বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শিগিরু ইশিবারের মন্ত্রিসভায় মাত্র দুজন নারী মন্ত্রী ছিলেন।তাকাইচি নিজেই মেনোপজের অভিজ্ঞতা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন এবং নারীদের স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তবে লিঙ্গ সমতা ইস্যুতে তিনি দলীয় রক্ষণশীল অবস্থানেই রয়েছেন। যেমন—তিনি বিবাহিত দম্পতির জন্য ভিন্ন পদবি ব্যবহারের বিরোধী, রাজপরিবারে কেবল পুরুষ উত্তরাধিকারের পক্ষে এবং সমকামী বিবাহের ঘোরতর বিরোধিতা করেন।রাজনীতি ও লিঙ্গ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইউকি সুজি মন্তব্য করেছেন, তাকাইচির নেতৃত্বে লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে বড় কোনো অগ্রগতি হবে বলে মনে হয় না, তবে একজন নারী প্রধানমন্ত্রীর প্রতীকী গুরুত্ব অনেক।টোকিওর কর্মজীবী নারী ইউকা বলেন, আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারব, জাপানে নারী নেতা এসেছে। তবে তাকাইচির অধীনে বাস্তবিক পরিবর্তন হবে কি না, তা নিয়ে তার সন্দেহ রয়েছে।বর্তমানে জাপানে নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বের সুযোগ সীমিত। ওইসিডি’র তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে জাপানে ব্যবস্থাপনা পদে নারীদের অংশগ্রহণ মাত্র ১৩.২ শতাংশ ছিল। এছাড়া, সংসদের নিম্নকক্ষে নারী আইনপ্রণেতার হার মাত্র ১৫ শতাংশ।নারী রাজনীতিকরা গৃহস্থালি ও পেশাগত দায়িত্বের ভারসাম্য রক্ষায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন এবং প্রায়ই লিঙ্গবিদ্বেষী মন্তব্যের শিকার হন। যেমন ২০২৪ সালে সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী তারো আসো নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ‘আন্টি’ ও ‘সুন্দরী নন’ বলে কটাক্ষ করেন।এমন বাস্তবতায় তাকাইচির প্রধানমন্ত্রী হওয়াকে কেউ কেউ জাপানে নারী নেতৃত্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখছেন। ২৩ বছর বয়সী রিউকি তাতসুমি বলেন, আমাদের দেশে নারী সম্রাট ছিলেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কখনও ছিলেন না। এটি জাপানের এগিয়ে যাওয়ার একটি সুযোগ।