স্বাস্থ্য ডেস্ক : স্তন ক্যানসার সচেতনতা দিবস পালিত। দেশের বিভিন্ন সংগঠন বা সংস্থা নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করছে। এ ছাড়া অক্টোবর মাস ব্রেস্ট বা স্তন ক্যানসার সচেতনতার মাস হিসেবে বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। বছরের অন্যান্য সময়েও স্তন ক্যানসার সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণায় মানুষ গোলাপি ফিতা পরিধান করে। স্তন ক্যান্সারের কারণে যাঁরা মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁদের স্মরণে, আক্রান্ত হয়েও যারা বেঁচে আছেন, তাদের সম্মান দেখাতে এবং স্তন ক্যানসারকে পরাজিত করতে একসঙ্গে কাজ করা মানুষদের প্রতি সমর্থন জোগাতে এই গোলাপি ফিতা পরিধান করা হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মকান্ডে মধ্য দিয়ে পালিত হয় স্তন ক্যানসার সচেতনতার এই মাস।
বাংলাদেশ স্তন ক্যানসার ফোরামের তথ্যে জানা গেছে দেশে প্রতি বছর ১৩ হাজার নারী নতুন করে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। মারা যান ৬ হাজার। সচেতনতা ও নিয়মিত স্ক্রিনিংয়ের অভাবে স্তন ক্যানসার দেরিতে ধরা পড়ায় মৃত্যুর হার কমছে না।
২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশ স্তন ক্যানসার সচেতনতা ফোরামের উদ্যোগে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতীকী গোলাপি শোভাযাত্রা ও সকাল সাড়ে ১০টায় তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে আলোচনা অনুষ্ঠানে ফোরামের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা তাতে অংশ নেয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক গবেষণা অনুযায়ী, প্রতি আটজন নারীর মধ্যে একজন স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন। ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী নতুন স্তন ক্যানসার রোগীর সংখ্যা ছিল ২২ লাখের বেশি এবং মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৮৫ হাজার মানুষের। বাংলাদেশে ২০২০ সালে নতুন আক্রান্ত নারীর সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজার ৭৮৩ জনের।
প্রাথমিক লক্ষণ :
স্তন ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে- স্তনে নতুন চাকা বা লাম্প, স্তনের আকার বা আকৃতিতে পরিবর্তন, চামড়া ফ্যাকাশে, লাল বা ফুলে ওঠা, স্তনবৃন্ত থেকে অস্বাভাবিক তরল নিঃসরণ, বগলে চাকা বা ফোলা। বয়স, লিঙ্গ, পারিবারিক ইতিহাস, ঘন স্তন টিস্যু এবং জীবনধারার কারণগুলোর মাধ্যমে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
সচেতনতা ও প্রাথমিক শনাক্তকরণ :
প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যানসার ধরা পড়লে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ- ২০ বছর বা তার বেশি বয়সী নারীদের মাসে একবার স্তন পরীক্ষা করা, ডাক্তার বা পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে পরীক্ষা, ২৯-৩৯ বছর বয়সীদের প্রতি ১-৩ বছরে একবার এবং ৪০ বছরের উপরের নারীদের প্রতি বছর পরীক্ষা করা দরকার। বিশেষজ্ঞরা জানান, সামাজিক লজ্জা এবং সচেতনতার অভাবের কারণে অনেক নারী প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা নেন না। তাই সচেতনতা বৃদ্ধি, প্রাথমিক শনাক্তকরণ এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি।
পাঁচটি পরামর্শ :
১. নিয়মিত স্ব-পরীক্ষা করা। ২. ৪০ বছর বয়সের পর প্রতি বছর একবার ম্যামোগ্রাফি করা। ৩. সুষম খাদ্য গ্রহণ করা ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা। ৪. ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকা। ৫. নিয়মিত ব্যায়াম করা। সর্বোপরি সচেতন থাকা জরুরি। মনে রাখতে হবে” সূচনায় ধরলে পড়া ক্যান্সার রোগ যায় যে সারা।
লেখক : অধ্যাপক ডা. রওশন আরা বেগম, রেডিয়েশন অনকোলজি বিশেষজ্ঞ,
অধ্যাপক, রেডিয়েশন অনকোলজি বিভাগ, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল। চেম্বার :আহসানিয়া মিশন এন্ড জেনারেল হাসপাতাল উত্তরা, ঢাকা। হটলাইন:
০১৬ ২৮ ৪৬ ৪০ ৬২, ০১৬১২-৩১-০৬-১৭
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available